=========================
অসীম কুমার চট্টোপাধ্যায়
=========================
অঞ্জনকে থামিয়ে সৌমেন্দু বলল , দিস্তার পর দিস্তা খাতা শেষ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ছাপার তো কোন লক্ষণ দেখছি না । তুই বলে ছিলিস ব্যবস্থা করবি । কিছুই তো হল না ।
আর একটু সবুর কর বন্ধু । অঞ্জন উত্তর দিল ।
মা জিজ্ঞেস করছিল খাতা গুলো কি কেজি দরে বেচে দেবে ?
সে কি ! বেচবে কেন ? জানিস না সবুরে মেওয়া ফলে ।
আমার মনে হয় এ জন্মে আর মেওয়া খাওয়া হবে না ।
ধৃতিমান বলল , ডোন্ট বি ডিসহার্টেন্ড । পথ একটা বেড়বেই ।
অলকানন্দা বলল , উই শ্যাল ওভার কাম সাম ডে ।
আড্ডা যখন বেশ জমে উঠেছে অলকানন্দার মা চা দিয়ে গেলেন । সাথে পেঁয়াজের পকৌড়া । বাইরে লাগাতার বৃষ্টি । পরিবেশটা দারুন ।
সৌমেন্দু বলল , আমার কি মনে হয় জানিস ?
সবাই একসাথে জানতে চাইলো তার মনের কথা ।
আমরা একটা বিশাল মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে আছি । মাঠের চারপাশে উৎসাহী মানুষের ভিড় । কলকোলাহল । ভেতরে কি হচ্ছে দেখতে পাচ্ছি না । ভিড়ের ভেতরে সুতো গলাবার মতো জায়গা নেই । ছাগলের তৃতীয় বাচ্চার মত শুধু লাফিয়ে যাচ্ছি আমরা । অনেকটা সময় অতিবাহিত । অবশেষে একজন সহৃদয় মানুষকে পেলাম ।
বিনয়ের সাথে জানতে চাইলাম , এত ভিড় কেন ? মাঠের ভেতর কি হচ্ছে ?
অবাক দৃষ্টিতে ওই বর্ষীয়ান দেখলেন আমাদের । বিস্ফোরিত চোখ । হাজার প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে ওই চক্ষুদ্বয়ে ।
স্নিগধ হয়ে বললেন , এটা সাহিত্যের উদ্যান । মাঠের অর্ধেকটা জুড়ে বিরাজ করছেন দুই কবি । বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর কবি কাজী নজরুল ইসলাম । তারপর প্রচুর নামিদামি কবি সাহিত্যিকরা রয়েছেন । এই যে ভিড় দেখছেন , এরা সবাই সাহিত্য চর্চা করেন । বহু বছর ধরে । অনেকে তো ত্রিশ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছেন মাঠের বাইরে । আমার বয়স সত্তর । এখনো কবিতায় ডুবে আছি । প্রতিবারই ভাবি এবার হয়তো সুযোগ পাবো । বুকে একরাশ আশা । সুযোগ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছি ।
চলে গেলেন ভদ্রলোক । সবাই চুপ ।
সৌমেন্দু বলল , অত: কিম ?
অঞ্জন বলল , আমার মাথায় একটা প্ল্যান এসেছে । চলে গেলেন ভদ্রলোক । সবাই চুপ ।
সৌমেন্দু বলল , অত: কিম ?
কি প্ল্যান ?
ক্যালেন্ডারের পাতায় ছাপাবো আমাদের কবিতা ।
সেখানেও তো টাকা লাগবে ।
না । লাগবে না । আজ এই পর্যন্ত থাক । বৃষ্টি থেমে গেছে । কালকে আমার প্ল্যানটা তোদের গুছিয়ে বলবো । চলি ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন